golpokotha FORUM
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.
Log in

I forgot my password

Latest topics
Who is online?
In total there are 25 users online :: 0 Registered, 0 Hidden and 25 Guests

None

[ View the whole list ]


Most users ever online was 45 on Fri Jan 08, 2021 4:00 am
Statistics
We have 61 registered users
The newest registered user is SHAMIMSOUND

Our users have posted a total of 22 messages in 21 subjects
Gallery


স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরনারীদের অবদান Empty
RSS feeds


Yahoo! 
MSN 
AOL 
Netvibes 
Bloglines 


Poll

স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরনারীদের অবদান

Go down

স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরনারীদের অবদান Empty স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরনারীদের অবদান

Post by Admin Tue Jan 26, 2010 7:11 pm

লক্ষ মৃত্যু আর নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে অর্জিত হয় বাঙালির কাঙ্ক্ষিত বিজয়। স্বাধীন বাংলাদেশ। এই স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরুষদের পাশাপাশি বহু নারীর স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে সে সব বীরনারীদের অবদান আজও পুরুষের সমান স্বীকৃতি পায়নি। ইতিহাসের পাতায়ও অনেকের ঠাঁই হয়নি। কারণ হিসেবে, নারীর শারিরীক শক্তি এবং যুদ্ধের পারঙ্গমতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। স্বদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সেই জাতির নারীপুরুষের সামগ্রীক অংশগ্রহণ ইতিহাসসত্য (ব্যতিক্রমও আছে বাংলাদেশে রাজাকারগোষ্ঠী)।

যুদ্ধ যে কেবলমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রেই সংগঠিত ও শেষ হয়, তা নয়; সমাজ-সংসারেও এর প্রভাব বিস্তৃত হয়; যেখানে বুলেট-বন্দুক নাও থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের বীরনারীর অনেকে যুদ্ধেক্ষেত্রে না থাকলেও তাঁরা যোদ্ধাদের খাদ্য, বাসস্থান, আর্থিক সাহার্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সশস্ত্র অবস্থান কিংবা সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে বহু বীর নারীর অংশগ্রহণ ঐতিহাসিক সত্যে প্রতিষ্ঠিত। তেমনি এক বীরের নাম তারামন বিবি। বীরপ্রতীক তারামন বিবি কুড়িগ্রামের মাধবপুরে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুহিব হাবিলদার তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়েসে মুহিবের কাছে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধাক্যাম্পে যোগ দিয়ে প্রথমদিকে রান্নার কাজে নিয়জিত হলেও ১১ নং সেক্টরের কমান্ডার বীরপ্রতীক আবু তাহের এর অধীনে তিনি বহু সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেন। তবে যুদ্ধের পর তিনি ছিলেন অনেকটাই নিভৃতে। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত জাতির এই গর্বিত যোদ্ধার খোঁজ কেউ রাখেননি। ১৯৯৫ সালে মহিলা সংস্থা তাঁকে ঢাকা নিয়ে আসেন।

বীরপ্রতিক খেতাবপ্রাপ্ত আরেক বীর নারীর নাম ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) সেতারা বেগম। কলকাতায় জন্মনেওয়া ডা. সেতারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্নাতক অর্জন করেন। তিনি ১৯৭০ সালে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কুমিল্লা সেনানিবাসে যোগ দেন। তাঁর ভাই এটিএম হায়দায়ও এ সময় পাকিস্তান থেকে কুমিল্লায় তৃতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর ডা. সেতারা এবং হায়দার একত্রে কিশোরগঞ্জ আসেন। তবে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে যোগ না দিয়ে তিনি মেঘালয়ে বাংলাদেশ হসপিটালে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এবং উদ্বাস্তু শিবিরে নিয়মিত সেবা প্রদান করেন। বিজয় অর্জনের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন ডা. সেতারা।

ভারতীয় উদ্বাস্তু শিবিরে সেবার কাজে নিয়োজিত আরেক বীর নারী রাজবাড়ির গীতা কর। গীতার পিতা একাত্তরের ৫ মে পাকবাহিনীর হাতে নিহত হন। এরপর গীতা ভারতে গমন করেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ব্রত নিয়ে মুক্তি সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসীকে বাংলাদেশের পক্ষ নেবার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। গাইড হিসেকেও কাজ করেন তিনি। একাত্তরের ২ জুলাই গীতা কর গেরিলা ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। এ ট্রেনিংয়ে তাঁর সঙ্গে ২০০ নারীও অংশগ্রহণ করেন। ট্রেনিং শেষে আগরতলায় ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ হাসপাতালে মেডিক্যাল অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে তিনি কাজ করেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাদানে তিনি ছিলেন অন্তপ্রাণ। একাত্তরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে কিছু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

মুক্তিযুদ্ধে অংশনেওয়া আর এক বীরনারী হেনা দাস (সম্প্রতি প্রয়াত)। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন নারায়নগঞ্জ হাই স্কুলের প্রধান শিকিক্ষা। গীতা করের মতো তিনিও কলকাতার পথে পথে সভা করে বাংলাদেশের জনগণের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। কলকাতায় তিনি শিক্ষকদের নিয়ে একটি সংগঠনও গড়ে তোলেন। ভারতীয় উদ্বাস্তু শিবিরে শিশুদের পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র সংগ্রহে নিয়োজিত ছিলেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারী পাকবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হলেও সঙ্গতকারণে প্রথম দিকে অনেকেই এটি প্রকাশ করেনি।

যিনি সাহস নিয়ে পাকবাহিনীর নির্যাতনের কথা স্বীকার করেন তিনি আমাদের সবার প্রিয় সাহসী নারী প্রখ্যাত ভাষ্কর্যশিল্পী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী।

গোপালগঞ্জের মানিককান্দির আর এক সাহসী ও দেশপ্রেমিক নারীর নাম নাজমা বেগম। রাজাকাররা তাকে কানন বনিক নামেও ডাকতো। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনীরা তাঁকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তাদের ক্যাম্পে ২ মাস আটক রাখে। এ সময় নাজমা বেগমের বাবা-মা ছিলেন ভারতের উদ্বাস্তু শিবিরে। একাত্তরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিবাহিনী তাঁকে এবং সেখানে বন্দী অন্যান্য নারীদেরকে উদ্ধার করেন। মুক্ত হয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অস্ত্রাগার দেখভালসহ তিনি রান্নার কাজে নিয়োজিত হন। পাশাপাশি সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে বেশকিছু যুদ্ধেও অংশ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজের বাড়িতে ফিরে আসলেও সমাজের অঙ্গুলি হেলনে পিতামাতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালেও মোশাররফ শেখ তাঁকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন।

মুক্তিযুদ্ধের আর এক বীরনারী যশোরের বাঘারপাড়ার হালিমা পারভীন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে রাজাকারা তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। তিনি তাঁর দুই নারী বন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। সশস্ত্র যুদ্ধশিক্ষা নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তবে একাত্তরের জুনের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পাকবাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে নির্যাতন ও ধর্ষণের পরও তিনি মুক্তি পাননি। এ সময় তাঁকে যশোর সেনানিবাসে নেয়া হয়। এখানে তাঁকে ক্রীতদাসী যৌনকর্মীর ভূমিকায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়। পাকবাহিনী তাঁকে দিয়ে জোরপূর্বক গণকবর খনন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ পোড়াতে বাধ্য করে। ডিসেম্বেরের ৬ তারিখে মুক্ত হয়ে তিনি ঘরে ফেরেন।

তবে রাজাকাররা তাঁর ওপর আবারও চড়াও হয়। তিনি পালিয়ে চাচার বাসায় অবস্থান নেন। তবে সেখানে বেশিদিন অবস্থান করতে পরেননি। অনেক কষ্টে স্থানীয় এক হাসপাতালে সেবিকার কাজ শুরু করেন।

যশোরের বাঘারপাড়ার আরেক বীরঙ্গনা ফাতিমা খাতুন। হালিমা পারভীনের সঙ্গে তিনি সম্মুখসমরে যুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে তাঁকে রাজাকাররা পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পাকবাহিনীর ক্যাম্পে তিনি ৬ মাস নির্যাতনের শিকার হন। যৌনকাজে অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য তাঁর হাতের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। যশোর সেনানিবাসে আটক রাখার সময় তিনি অন্তঃসত্বা হন। অব্যহত নির্যাতনে এক পর্যায়ে তাঁর জীবন সংকটাপন্ন হয়। ডিসেম্বরের ৬ তারিখে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে উদ্ধার করেন। যুদ্ধপরবর্তী এলাকার জনগণ তাঁকে পুরস্কারের পরিবর্তে ধিকৃত করে। তাঁর পিতা-মাতাকেও ধিক্কার জানায়। একপর্যায়ে মা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

হালিমা ও ফাতিমার সঙ্গে একত্রে সমরাস্ত্র শিক্ষানেওয়া আর এক বীরনারী যশোরের বাঘারপাড়ার রোকেয়া খাতুন। তাঁদের সঙ্গে তিনিও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। যশোর সেনানিবাসে ৬ মাস বন্দী জীবনে একইভাবে তাঁকেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পাকবাহিনী তাঁকে বেয়োনেট বিদ্ধ করে সেনানিবাসের এক অন্ধকার কক্ষে ফেলে রাখে। একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর মুক্ত হয়ে বাড়িতে ফেরেন তিনি কিন্তু হালিমা ও ফাতিমার মতো সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এক বয়স্ক লোককে বিয়ে করতে বাধ্য হন।

সাতক্ষীরার কামাল নগরের জুলেখা খাতুনের যুদ্ধের ইতিহাস একটু ভিন্ন। একাত্তরে তাঁর স্বামী আব্দুল কাদের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি গেরিলাদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর আদান-প্রদান, বিভিন্নস্থানে অস্ত্র সরবারহসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত ছিলেন। কাদেরের কাজে স্ত্রী জুলেখা সার্বিক সহায়তা করতেন। একাত্তরের মধ্য এপ্রিলে সাত-আট ট্রাক পাকসেনা কাদেরের বাসা আক্রমন করে তাঁকে বুলেটবিদ্ধ করে। জুলেখা তাঁর নয় সন্তানসহ পালাতে সক্ষম হন। কিন্তু রাজাকারদের ভয়ে তিনি কোথাও আশ্রয় পাননি। বরং পালাতে গিয়ে তিনি তাঁর ছোট মেয়েকে হারিয়ে ফেলেন।

শেরপুরের নালিতাবাড়ির আমীরজান বেওয়া মুক্তিযুদ্ধে অংশনেওয়া আর এক বীরনারী। ভারতের উদ্বাস্তু শিবিরে যাবার পথে পাকসেনা ও রাজাকাররা তাঁর স্বামী আব্বাস আলী সরকার, ছেলে ইদ্রিস, দু’মেয়ে ফিরোজা খাতুন ও রাশিদা খাতুনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তবে আমীরজান বেওয়া অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। যুদ্ধের দিনগুলিতে তিনি ভারতের উদ্বাস্তু শিবিরে সেবিকা হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পর দেশে ফিরে আসেন।

শেরপুরের নালিতাবাড়ির বীরনারী শহরবানু ছিলেন আমেরজান বেওয়ার আত্মীয়। তাঁর স্বামী কলিমুদ্দীন রাজাকারদের হাতে নিহত হন। এর পর থেকেই শুরু হয় তাঁর উদ্বাস্তু জীবন। এভাবে লক্ষ নারীর জীবনে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবমণ্ডিত ক্ষত, গৌরব ও সাহস মিশে আছে। দুই লক্ষ মা-বোনের ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকারের কারণ হিসেবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, পাকবাহিনী এই ধর্ষণের মাধ্যমে বাঙালীর স্বাধীন রক্তকে দুষিত করতে চেয়েছিল। তবু দেশের জন্য যারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাঁরা কষ্ট ঢেকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত ফল হিসেবে বিজয়কেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আমাদের বীরনারী বীরঙ্গনার সন্তানরা মায়ের অবদানের জন্য গর্ববোধ করেন। পাশাপশি নারীদের সাম্প্রতিক সহিংতার বিষয়টি তাদের জন্য কষ্টের। কারণ এই স্বাধীন বাংলাদেশেও নানান কারণে তারা তাদের মায়েদের মতো শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারছেন না।
Admin
Admin
Administrator
Administrator

Posts : 15
Join date : 2009-10-18
Age : 51
Location : bahrain

http://golpokotha.webs.com

Back to top Go down

Back to top


 
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum